১৪৫৩ সালে কনস্টান্টিনোপল এর পতনের পর অটোমান বা ওসমানি সাম্রাজ্যের তৎকালীন মুসলিম শাসক ফতেহ সুলতান মুহাম্মদ নিজ অর্থায়নে এটি খ্রীশ্চানদের থেকে ক্রয় করে মসজিদে রূপান্তরিত করেন।
পরে সুলতান হায়া সোফিয়াকে একটি ওয়াকফ সম্পত্তিতে রূপান্তর করেন এবং নিজের নামে ফাউন্ডেশন গঠন করে তার ওপর হায়া সোফিয়ার দায়িত্ব অর্পণ করেন। এরপর দীর্ঘ ৪৮২ বছর এটি মসজিদ হিসেবেই সমহিমায় বিরাজ করছিল।
১৯২৩ সালে কামাল পাশা তুরস্ক কেন্দ্রিক ওসমানি খেলাফতের বিলুপ্ত ঘোষণা করে সেকুলার শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করলেও তার শাসনামলেও এটি দীর্ঘ আট বছর মসজিদ হিসেবেই ব্যবহৃত হয়েছিল।
জনরোষের ভয়ে ক্ষমতা গ্রহণের সাথে সাথেই তিনি মসজিদটিকে বন্ধ করতে বা জাদুঘরে রূপান্তরিত করতে সাহস পাননি। এজন্য তাকে দীর্ঘ আট বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। ১৯৩৫ সালে এটি জাদুঘরে রূপান্তর করার আগে তৎকালীন সরকার ৪ বছর পর্যন্ত মসজিদটিকে বন্ধ করে রেখেছিল।
তবে এটা ঠিক, ওসমানি খেলাফত প্রতিষ্ঠার আগে এটি কনস্টান্টিনোপলের খ্রিস্টান ক্যাথেড্রাল হিসাবে নির্মিত হয় ৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে। পরবর্তীতে ’নিকা দাঙ্গায়’ এটি ধ্বংস হয়েছিল। ১২০৪ সালে, এটি চতুর্থ ক্রুসেডারদের দ্বারা লাতিন সাম্রাজ্যের অধীনে রোমান ক্যাথলিক ক্যাথেড্রালে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। ১২৬১ সালে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের ফিরে আসার পরে পূর্ব অর্থোডক্স চার্চে পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল।
তাই ১৯৩৫ সালে মসজিদটিকে গীর্জায় রূপান্তরের দাবি উঠলেও যেহেতু মুসলিম শাসক ফতেহ সুলতান মুহাম্মদ নিজ অর্থায়নে এটি খ্রীশ্চানদের থেকে ক্রয় করেছিলেন তাই মসজিদটিকে গীর্জায় রূপান্তরের দাবি ধোপে টেকেনি।
কিন্তু কামাল পাশার ধর্মনিরপেক্ষ সরকার ঐতিহাসিক এই মসজিদটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে।
অবশেষে তুরস্কের আধুনিক সুলতান এরদোয়ান আবার হায়া সোফিয়া জাদুঘরকে মসজিদে রুপান্তর করতে সক্ষম হন।