হাঁটার উপকারিতা সত্যিই অকল্পনিও! সর্বোৎকৃষ্ট ব্যায়াম ও বটে!
হাঁটা একটি উৎকৃষ্ট ব্যায়াম। নিয়মিত হাঁটলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এ তথ্য সবার জানা থাকলেও স্পষ্ট ধারণা অনেকেরই নেই। জেনে নেওয়া যাক হাঁটার কিছু উপকারিতা।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
নিয়মিত হাঁটলে টাইপ–২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও হাঁটা বেশ কার্যকর। হাঁটলে শরীরের পেশিতে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে। ফলে রক্তের গ্লুকোজ কমে।
উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে এবং তা নিয়ন্ত্রণে হাঁটা বেশ কার্যকর। নিয়মিত হাঁটলে রক্তনালির দেয়ালে চর্বি কম জমে। তাই করোনারি হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে। এ ছাড়া মূল করোনারি রক্তনালিতে ব্লক থাকলেও নিয়মিত হাঁটার কারণে আশপাশের ছোট রক্তনালিতে রক্ত সরবরাহ বাড়ে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। কমে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও।
মেদ কমায়
নিয়মিত হাঁটলে মেদ কমে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়ে, মন্দ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমে।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়
নিয়মিত হাঁটলে ওজন কমে। ফলে স্তন ক্যানসারসহ অন্য অনেক ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।
মেজাজ ভালো রাখে
নিয়মিত হাঁটলে মস্তিষ্কে এনডর্ফিন, ডোপামিন, সেরোটোনিনের মতো ভালো অনুভূতি তৈরির রাসায়নিক নিঃসরণ বাড়ে। ফলে বিষণ্নতা কমে, মন–মেজাজ ভালো থাকে, রাতে ঘুম হয় চমৎকার।
হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
হাঁটার সময় হৃৎস্পন্দন আর শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি বাড়ে। ফলে হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসে রক্ত সরবরাহ বাড়ে। এতে গুরুত্বপূর্ণ এই দুই অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়ে।
হাড় ও গিঁটের জন্যও ভালো
হাঁটলে হাড়ের ঘনত্ব বাড়ে এবং ক্ষয় কমে। যাঁরা নিয়মিত হাঁটেন, তাঁদের অস্টিওপোরোসিস কম হয়। হাড়ের জোড়া বা গিঁট সুস্থ থাকে।
শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়ায়
হাঁটার ফলে পেশিতে রক্ত সরবরাহ বাড়ে। এতে পেশির শক্তি বাড়ে।
কিছু পরামর্শ
হাঁটার উপকার পেতে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন হাঁটুন। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ১৫০ মিনিট হাঁটতে হবে। একবারে ৩০ মিনিট হাঁটতে না পারলে ১০ মিনিট করে দিনে তিনবার হাঁটা যেতে পারে।
হাঁটার জন্য সকাল বা বিকেলের একটি নির্দিষ্ট সময় বেছে নিন। দ্রুত হাঁটুন যাতে ঘাম হয়, নাড়ির স্পন্দন বাড়ে। হাঁটা শুরুর পর প্রথম কয়েক মিনিট এবং শেষ কয়েক মিনিট ধীরে হাঁটুন। এতে শরীর মানিয়ে নেবে।
ভরপেট খাওয়ার পরপরই হাঁটবেন না। হাঁটার শুরুতে এবং শেষে একটু পানি পান করুন। ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক ও উপযুক্ত জুতা পরে হাঁটুন।
লেখক: মো. শহীদুল্লাহ, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ