হৃদরোগ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের মূল কারণ চিনি!
দ্য ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ওয়েবসাইট গত নভেম্বরে একটি চাঞ্চল্যকর প্রবন্ধ ছাপিয়েছে। পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের বরাত দিয়ে ওয়েবসাইটটি লিখেছে যে সুগার ইন্ডাস্ট্রিগুলো তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থে বিজ্ঞানকে নোংরাভাবে ম্যানিপুলেট বা ব্যবহার করেছে।
১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে পরিচালিত বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে চিনি হলো করোনারি হার্ট ডিজিজ, স্ট্রোক ও ব্লাডার ক্যান্সারের প্রধান কারণ। ১৯৬৫ সালে গোপনীয় তথ্য পর্যালোচনা করতে গিয়ে ক্রিস্টিন ই কের্নস, ডরি অ্যাপোলোনিও এবং স্ট্যান্টন এ গ্ল্যাল্টস প্রকাশ করেন যে সুগার রিসার্চ ফাউন্ডেশন যুক্তরাজ্যে গোপনে একটি গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করে।
সেই গবেষণা প্রকল্পের ফলাফলে দেখা যায়, চিনি শরীরের ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা মাত্রাতিরিক্তভাবে বাড়িয়ে দেয়, যা হৃদেরাগ ও হার্ট অ্যাটাকের জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। গবেষণায় আরো প্রমাণিত হয় যে মাত্রাতিরিক্ত চিনি গ্রহণের ফলে প্রস্রাবে বিটাগ্লুকোরোনাইডেজ এনজাইমের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যার সঙ্গে ব্লাডার ক্যান্সারের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
প্রাথমিক ফলাফল পর্যালোচনার পর সুগার রিসার্চ ফাউন্ডেশন দেখল, হার্ট অ্যাটাক ও ব্লাডার ক্যান্সারের জন্য চিনিকে দায়ী করা হলে তাদের চিনি ব্যবসার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং মুনাফায় ধস নামবে। তাই তারা বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়, ফলে গবেষণা আর সামনে এগোয়নি এবং ফলাফলও প্রকাশ না করে গবেষণা প্রকল্পকে কবর দিয়ে দেওয়া হলো।
কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ২০১৬ সালে সেই গোমর ফাঁস হয়ে গেল। কারণ ওই বছর দ্য জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ ‘সুগার ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড করোনারি হার্ট ডিজিজ রিসার্চ : আ হিস্টোরিক্যাল অ্যানালিসিস অব ইন্টারনাল ইন্ডাস্ট্রি ডকুমেন্টস’ শীর্ষক একটি চাঞ্চল্যকর প্রবন্ধ প্রকাশ করে।
এই প্রবন্ধের লেখকরা ছিলেন কের্নস, লরা এ স্মিডট এবং গ্ল্যাস্টস। অতীতে ড. গ্ল্যাস্টস যুগ যুগ ধরে তামাক কম্পানিগুলোর ধূমপানের কারণে ক্যান্সার ও হৃদেরাগের কারণগুলো ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টাকে প্রকাশ করে দিয়েছিলেন।
ওয়ার্ল্ড ক্যাট (World CAT) নামের একটি গ্লোবাল ক্যাটালগ বিভিন্ন লাইব্রেরির সংগ্রহ থেকে পরিশোধিত চিনি ব্যবসায়ী গ্রুপের, যা পরবর্তী সময়ে সুগার অ্যাসোসিয়েশন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, কর্মকাণ্ডের দলিল খুঁজে বের করে।
এ ছাড়া দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস, দ্য ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল, দ্য ইউএস পাবলিক হেলথ সার্ভিসেস, আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন থেকেও গবেষকরা পর্যাপ্ত দলিলপত্র খুঁজে পেতে সমর্থ হন।
দ্য জার্নাল অব আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের গবেষকরা ১৯৫০ এবং ১৯৬০-এর দশকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্কাইভ থেকে এমন সব গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র আবিষ্কার করেন, যার মধ্যে সুগার ইন্ডাস্ট্রি ও সুগার অ্যাসোসিয়েশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কিছু গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের অশুভ যোগাযোগের তথ্য-প্রমাণ লিপিবদ্ধ ছিল।
এসব দলিলপত্র থেকে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় যে চিনি গ্রহণের সঙ্গে করোনারি হার্ট ডিজিজ বা হৃদেরাগ ও হার্ট অ্যাটাকের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এবং এর পরে অর্থাৎ ১৯৫০-এর দশক থেকেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং পুষ্টিবিদরা জোর দিয়ে বলে এসেছেন যে মাত্রাতিরিক্ত পরিশোধিত চিনি, শর্করা, আলু, ভাত, রুটির মতো পরিশোধিত শর্করা খাওয়ার কারণে মানুষের ওজন বাড়াসহ স্থূলতার হার বেড়ে যায়।
সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা গুরুত্ব দিয়ে বলা শুরু করেন যে অতিমাত্রায় চিনি গ্রহণ করার কারণে হার্ট ডিজিজ, ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো প্রাণঘাতী রোগের সৃষ্টি করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর চিনি ও চিনিসমৃদ্ধ খাবার ও কোমলপানীয় সেবনের সঙ্গে সঙ্গে হৃদেরাগ, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের হারও ভয়ংকরভাবে বাড়তে থাকে।
হৃদেরাগ, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ প্রকাশ হতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে গবেষকদের সঙ্গে সুগার ইন্ডাস্ট্রি, সুগার অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের বিপরীতধর্মী যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। চিনির ভবিষ্যৎ সংকটাপন্ন দেখে এর স্বার্থ সংরক্ষণে সুগার অ্যাসোসিয়েশন ১৯৫৪ সালে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও এর ফলাফলের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে প্রচারণা শুরু করে।
সুগার অ্যাসোসিয়েশনের বিষোদগারের মূল টার্গেট ছিল—জন ইউদগিন। জন ইউদগিন ছিলেন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের কুইন এলিজাবেথ কলেজের পুষ্টিবিদ্যার অধ্যাপক। তিনি ১৯৭২ সালে তাঁর গ্রুপের গবেষক কর্তৃক পরিচালিত গবেষণার ফলাফল নিয়ে ‘Pure, White and Deadly, How sugar is killing us and what we can do to stop it’ (পরিশুদ্ধ, সাদা, প্রাণঘাতী চিনি আমাদের কিভাবে হত্যা করেছে এবং তা প্রতিরোধ করার জন্য আমরা কী করতে পারি) শীর্ষক একটি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশ করেন।
গবেষণার ফলাফলে ইউদগিন দেখান যে বিশ্বব্যাপী হৃদেরাগের হার বৃদ্ধির সঙ্গে পরিশোধিত চিনি গ্রহণের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। একইভাবে সুক্রোজ (গ্লুকোজ ফ্রুকটোজের সমন্বয়ে গঠিত ডাইস্যাকারাইড) খাওয়ার সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের সম্পর্কের কথা প্রকাশ করেন ইউএস আইওয়া গ্রুপের গবেষক আলফ্রেডো লোপেজ, রবার্ট হোজেজ এবং উইলার্ড ক্রেল।
১৯৬৫ সালের ১১ জুলাই নিউ ইয়র্ক হেরাল্ড ট্রিবিউন অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন কর্তৃক প্রকাশিত ফলাফল নিয়ে একটি পুরো পৃষ্ঠার প্রবন্ধ ছাপায়। প্রবন্ধে তারা উপসংহারে আসে যে নতুন গবেষণা সুক্রোজ ও হার্ট অ্যাটাকের সম্পর্ককে গভীরভাবে শক্তিশালী করেছে।
আর্কাইভের দলিলপত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে গবেষকরা দেখতে পান যে সুগার ইন্ডাস্ট্রি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ নিউট্রিশন বিভাগের প্রধান ফ্রেড্রিক স্ট্যারকে সুগার অ্যাডভাইজারি বোর্ডে যোগ দেওয়ার জন্য ভাড়া করেন।
১৯৪৩ সালে ফ্রেড্রিক স্ট্যার সুগার অ্যাডভাইজার বোর্ডে যোগদান করেন এবং ১৯৪৩ সাল থেকেই ফ্রেড্রিক স্ট্যার তাঁর বিভাগের জন্য খাদ্য কম্পানিগুলো থেকে নিয়মিত আর্থিক অনুদান পেয়ে আসছিলেন এবং দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস, দ্য ন্যাশনাল হার্ট ইনস্টিটিউট এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরামর্শক হিসেবে কাজ করে আসছিলেন।
সুগার অ্যাসোসিয়েশন এবং তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট জন হিকসন সুগার প্রজেক্ট-২২৬ নামের একটি প্রজেক্ট শুরু করেন এবং ফ্রেড্রিক স্ট্যারসহ ডি. মার্ক হেগস্টেড ও রবার্ট ম্যাকগেন্ডি নামের হার্ভার্ডেও আরো দুজন গবেষককে ভাড়া করেন। তাঁরা পরবর্তী সময়ে চিনির গুণাগুণ গেয়ে অনেক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশ করেন।
সুগার অ্যাসোসিয়েশন এই ভাড়া করা গবেষকদের চিনির পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য এবং চিনির দোষ চর্বি ও কোলেস্টেরলের ঘাড়ে চাপানোর জন্য ছয় হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার (২০১৬ সালের হিসাবে ৪৮ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলার) ঘুষ দেন।
২০১৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকা আনাহাদ ও’কোনোর How the Sugar Industry Shifted Blame to Fat (কিভাবে চিনি কম্পানি চর্বির ওপর দোষ চাপাল) শীর্ষক এক প্রবন্ধ লিখেছিলেন।
সমসাময়িককালে আমেরিকার ‘জার্নাল অব আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন ইন্টারনাল মেডিসিনে’ চিনিসংক্রান্ত এই অবিশ্বাস্য কেলেঙ্কারি উদ্ঘাটিত হয়। এই খ্যাতনামা জার্নালটি ফাঁস করে দেয় যে ১৯৬৭ সালে ‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে’ প্রকাশিত হার্ভার্ডের গবেষণা প্রবন্ধে চিনিকে বাদ দিয়ে হার্ট অ্যাটাকের জন্য একতরফাভাবে চর্বি ও কোলেস্টেরলকে দায়ী করার ঘটনাটি ছিল দুরভিসন্ধিমূলক।
পরিমিত চর্বি, কোলেস্টেরল হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ নয়। অতিমাত্রায় চিনি খাওয়ার ফলে মানুষ অসুস্থ হয় অথবা কার্ডিয়াক ফেইলিওরের কারণে মারা যায়। ডায়াবেটিকের রোগীদের হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকে বেশি মারা যাওয়ার সঙ্গে চিনির সম্পর্ক গভীর।
কোলেস্টেরল ছাড়া একদণ্ডও আমাদের শরীর চলে না। অথচ এই মহা উপকারী কোলেস্টেরলকে মহা কালপ্রিট বানিয়ে ছাড়ল ঘুষখোর দুই গবেষক। হৃদেরাগ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস, কিডনি ফেইলিওরসহ অসংখ্য রোগের উৎপত্তির কারণ চিনি।
চিনি হৃৎপিণ্ডের রক্তনালির অভ্যন্তরীণ দেয়ালে প্রদাহ সৃষ্টি করার মাধ্যমে ক্ষত সৃষ্টি করে। এই ক্ষতে আঁশ, প্লেটিলেট, লাইপোফেইজ, চর্বি ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল ও ট্রান্স ফ্যাট জমে গিয়ে ইশকিমিয়া ও মাইওকার্ডিয়াল ইনফার্কশন সৃষ্টি করে।
ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বলতে ‘ব্যাড কোলেস্টেরল’ বা এলডিএলকে বোঝায় না। ক্ষতিকর কোলেস্টেরল হলো ওসব পরিবর্তিত রাসায়নিক কোলেস্টেরল যৌগ, যা কোলেস্টেরলসমৃদ্ধ খাবারকে ১২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় অনেকক্ষণ রান্না করলে বা পোড়ালে অক্সিডেশনের মাধ্যমে প্রস্তুত হয়।
চিকিৎসাবিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা যুগ যুগ ধরে বলে এসেছেন এবং এখনো অনেকেই বলছেন, কোলেস্টেরলের কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসকরা অনন্তকাল থেকে রোগীদের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো এবং চর্বিজাতীয় খাবার না খেতে পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
চিকিৎসকদের ধারণা, চর্বিজাতীয় খাবার কম খেলে এমনিতেই রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে আসবে। কিন্তু এই ধারণা সত্যি নয়। কারণ শরীরে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির মূল কারণ চর্বিজাতীয় খাবার নয়, বরং অত্যধিক পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাজাতীয় খাবার খাওয়া।
এ প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য হলো, শরীরে অতিমাত্রায় কোলেস্টেরল বা এলডিএল তৈরি হতে পারে না যদি কেউ সব কিছু পরিমিত খায় বা গ্রহণ করে। আর কোলেস্টেরলই হার্ট অ্যাটাকের একমাত্র কারণ নয়। মাত্র কয়েক বছর আগে আবিষ্কৃত হলো, হৃৎপিণ্ডের শিরা-উপশিরার দেয়ালে প্রদাহ সৃষ্টিই হৃদেরাগের মূল কারণ। মস্তিষ্কের শিরা-উপশিরার দেয়ালে অনুরূপ প্রদাহ সৃষ্টি স্ট্রোকের কারণ।
শরীর, মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখার জন্য পরিশোধিত চিনি, পরিশোধিত আটা, ময়দা এবং এসব শর্করা থেকে প্রস্তুত যাবতীয় প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খেতে হবে বা পরিহার করতে হবে। শিরা-উপশিরার প্রদাহ সৃষ্টির ক্ষেত্রে চিনি বা বিভিন্ন শর্করা বা চিনিসমৃদ্ধ খাবার এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পরিশোধিত চিনি বেশি খাওয়া হলে তা অতি দ্রুত রক্তপ্রবাহে পৌঁছে যায়।
রক্তে ভেসে বেড়ানো কোটি কোটি গ্লকোজ অণু শিরা-উপশিরার দেয়ালে অনবরত আঘাত হানে, আহত করে এবং পরিণতিতে প্রদাহ ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এ কারণেই ডায়াবেটিকের রোগীরা অত্যধিকভাবে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়।
অবজ্ঞা, অবহেলা, সময়মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করা, পরিমিত পুষ্টিকর সুষম খাবার না খাওয়া, ধূমপান পরিহার না করা, ব্যায়াম না করা, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান না করা, লাইফস্টাইল পরিবর্তন না করা, দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন না করা ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি অগাধ বিশ্বাস না রাখার কারণে আমরা স্ট্রোক ও হৃদেরাগের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হই।
সুস্থ থাকা আল্লাহর এক অশেষ নিয়ামত। তাই নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন ও লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে সবাই সুস্থ থাকার ব্রত গ্রহণ করবেন—এটাই প্রত্যাশা করি।
লেখক : অধ্যাপক মুনীরউদ্দিন আহমদ , ফার্মেসি অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়