চির তরুণ থাকার টিপস্ ! ডাঃ দেবী শেঠী

প্রত্যেকেই চায় তরুণ থাকতে। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীর ভাঙ্গতে শুরু করে। তবে প্রাত্যহিক জীবনে যদি খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে সবকিছুতে কিছুটা নিয়ম মেনে চলতে পারি তাহলে তারুণ্যকে ধরে রাখতে পারি অনেকদিন!

এবার আপনাদের সামনে তুলে ধরছি তারুণ্যকে ধরে রাখতে বিশ্ব বিখ্যাত হার্ট সার্জন ডাঃ দেবী শেঠীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শঃ

 

১. খুব ধীরে ধীরে চেষ্টা করতে করতে কয়েক মাসের মধ্যে সকালে ঘুম থেকে উঠে চার গ্লাস পানি

খাওয়ার অভ্যাস করুন। এর পর বাথরুমে যান।

 

২. বাথরুম থেকে ফিরে এসে আরও এক গ্লাস পানি খান এবং তার পর খান দুধ ছাড়া খুব হালকা এক

কাপ চা। আপনার ওজন বেশি হলে চিনি খাওয়া ছেড়ে দিন। চা কখনোই অতিরিক্ত গরম খাবেন না।

 

৩. সারা দিনে ৮ থেকে ১২ গ্লাস বাড়তি পানি খাবেন।

 

৪. পানি খাওয়ার নাম হচ্ছে হাইড্রোথেরাপি রা জলচিকিৎসা। মূলত এটি হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার

বছরের প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসা। আধুনিক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে- ঘুম থেকে

উঠে ধীরে ধীরে চার গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস করলে প্রায় ৩৬ ধরণের রোগ হয় না এবং হলেও

সেরে যায়।

 

৫. অপর পক্ষে, দুধহীন এবং দুধ-চিনি-হীন হালকা গরম চা হচ্ছে আড়াই হাজার বছর আগের একটি

চায়নিজ হারবাল মেডিসিন । সেকালে এই চা দিয়ে হার্ট, ব্লাড প্রেসার (উচ্চ রক্তচাপ) ও পেটের

নানা রকম রোগের চিকিৎসা করা হতো। আবার আধুনিক বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে- চায়ে

রয়েছে অ্যান্টিঅিডেন্ট, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে নিশ্চিত অবদান রাখে। এ ছাড়াও অন্য বহুগুণ

রয়েছে চায়ে। তবে যে চা-টা প্রক্রিয়াজাত হয়নি, সে চায়ের গুণাগুণই অপেক্ষাকৃত ভালো।

 

৬. ভিটামিন সি একটি বৈপ্লবিক খাদ্যপ্রাণ এর গুণাগুণ অসংখ্য। জানা গেছে, দিনে ১ হাজার

মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খেলে মানুষ চির তরুণ থাকে। তবে ট্যাবলেট খেলে কিছুই উপকার পাওয়া যায় না।

প্রতিদিনই কমবেশী খেতে হবে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ তাজা ফলমূল। ভিটামিন সিও ক্যান্সার ঠেকাতে

সাহায্য করে। আমলকি, সব ধরনের লেবু, টমেটো, কমলা, পেয়ারা, নানা রকর টক স্বাদের ফলে

বিভিন্ন মাত্রায় ভিটামিন সি রয়েছে।

 

৭. ধূমপানসহ সকল ধরণের নেশা জাতীয় অভ্যাস ত্যাগ করুণ। কারণ নেশা মানুষকে সকল দিক দিয়ে

ধ্বংস করে দেয়।

 

৮. রেডমিট অর্থাৎ গরু, মহিষ, খাসি, ভেড়া ইত্যাদির মাংস খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে। ফার্মের

মুরগিও চলবে না। শুধু চর্বিহীন বাচ্চা মুরগির মাংস খাওয়া চলতে পারে।

 

৯. প্রচুর পরিমাণে আধা-সেদ্ধ শাক-সবজি, তরিতরকারি এবং খুব অল্প পরিমাণে ভাত-রুটি খাওয়া উচিত। ভাজাভুজি খাবেন না। অতিরিক্ত তেল, চর্বি, ঘি, মাখন খাবেন না। মসলার বিভিন্ন ভেষজ গুণ আছে, তবুও রান্নায় খুব বেশি মসলা ব্যবহার করবেন না।

 

১০. সালাদ হিসাবে প্রতিদিন বেশি করে খাবেন কাঁচা লেটুস পাতা, পুদিনা পাতা, টমেটো ইত্যাদি।

 

১১. বিধিনিষেধ না থাকলে সকালে খালি পেটে এক চামচ মধু খাবেন।

 

১২. ছোট-বড় সব ধরনের মাছ খাবেন। সমুদ্রের মাছ খাওয়া অভ্যাস করতে পারলে তো খুবই ভালো।

কেননা, এটা মহৌষধ। গাদা-গাদা মাছের কাটা খাওয়া ঠিক নয়। ওতে পাকস্থলিতে পাথর হতে পারে।

 

১৩. সূর্যমূখী ফুলের বীজ হচ্ছে হার্টের ভেষজ ওষুধ। রান্নায় সূর্যমূখী তেল ব্যবহার করলে

হার্টের সুরক্ষা যেমন হয়, তেমনি হার্টের অসুখ থাকলে তা সারাতে সাহায্য করে।

 

১৪. প্রতিদিন অল্প একটু টক দই খাওয়ার অভ্যাস করুন। টক দই উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে আনতে

সাহায্য করে ।

 

ডা. দেবী শেঠী

 

Related Post